গার্মেন্টস কোয়ালিটির ট্রেনিং কোথায় নেবেন ?
গার্মেন্টস কোয়ালিটির ট্রেনিং কোথায় নেবেন ?
বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের বিকাশের কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশ বড়। চাহিদা রয়েছে এমন চাকরিগুলোর একটি হলো গার্মেন্টস কোয়ালিটি কন্ট্রোলারের কাজ। এ পেশায় আসতে হলে আপনার উচিত যথাযথ ট্রেনিং নেয়া। কোথায় গার্মেন্টস কোয়ালিটির ট্রেনিং নিতে পারেন, সে বিষয়ে জেনে নিন এখানে।
গার্মেন্টস কোয়ালিটির ট্রেনিং বলতে কী বোঝায়?
মার্চেন্ডাইজারের কাছ থেকে নেয়া পোশাক যেন অর্ডারের মানদণ্ড (যেমন, সঠিক মাপ ও আকার) অনুযায়ী তৈরি করা হয়, তার জন্য শ্রমিকের কাজ পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করাকে গার্মেন্টস কোয়ালিটি কন্ট্রোল বলে। অর্থাৎ তৈরি পোশাকের সামগ্রিক মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত পুরো প্রক্রিয়াকে কোয়ালিটি কন্ট্রোল বলা হয়। এ ব্যাপারে দক্ষ হলে সফল কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসার হিসাবে কাজ করতে পারবেন।
তৈরি পোশাক খাতে গার্মেন্টস কোয়ালিটি –
পণ্যের মান নিশ্চিত করে।
সঠিক সময়ে ডেলিভারি নিশ্চিত করে।
কোম্পানির সম্পদের সঠিক ব্যবহারে সাহায্য করে।
উৎপাদন খরচ কমায়।
অপচয় রোধে সহায়তা করে।
ক্রেতার গ্রহণযোগ্যতা অর্জনে সাহায্য করে।
যেখানে পাবেন গার্মেন্টস কোয়ালিটির ট্রেনিং এ বিষয়ে সরাসরি ট্রেনিং নেবার সুযোগ তুলনামূলকভাবে সীমিত। তবে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু শর্ট কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আবার টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক বা ডিপ্লোমা ডিগ্রি নেবার সময় গার্মেন্টস কোয়ালিটি নিয়ে পড়ানো হয়।
শর্ট ট্রেনিং
টেক্সটাইল টুডে ট্রেনিংয়ে মূলত কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের উপর ট্রেনিং নিতে পারবেন। সদ্য গ্র্যাজুয়েট থেকে শুরু করে গার্মেন্টসের মালিক – এ ট্রেনিং সবার জন্য উন্মুক্ত। ফী হিসাবে দিতে হবে ৳৫,৯০০।
বিডিজবস কোয়ালিটি কন্ট্রোল নিয়ে ওয়ার্কশপ আয়োজন করে। এ খাতে কাজ করতে আগ্রহী যে কেউ অংশ নিতে পারবেন এতে। ফী সাধারণত নির্ভর করে ট্রেনিংদাতার উপর।
ডিপ্লোমা
সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা ডিগ্রি নেবার ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট। ৬ মাসব্যাপী এ কোর্সের ফী ৩০ হাজার টাকা। গ্রাজুয়েশন করা থাকলে আপনি কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন।
স্নাতক
বাংলাদেশের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সবচেয়ে পরিচিত প্রতিষ্ঠান বুটেক্স (BUTEX) থেকে ও এর অধীনে ঝিনাইদহ, নোয়াখালী, পাবনা, চট্রগ্রাম ও বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি দেয়া হয়।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (KUET), ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (DUET), মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ আছে।
বাংলাদেশে মোট ১৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (AUST), বিজেএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বিটিএমএ দ্বারা পরিচালিত ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ (NITER) বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম টেক্সটাইল শিক্ষাবিষয়ক ইনস্টিটিউট।
ট্রেনিং বা কোর্সগুলোতে যা শিখতে পারবেন
কোয়ালিটি কন্ট্রোলের প্রক্রিয়া;
গার্মেন্টস ডিজাইন, ফিটিং ও মাপের গুরুত্ব;
পোশাক তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের ভুল;
ফ্যাব্রিকের মান ও খুঁত নির্ণয়;
কাঁচামাল ও উপকরণের (যেমন, তুলা ও সুতা) মান;
ডায়িংয়ের গুণগত মান ঠিক রাখার উপায়;
কাটিংয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা;
প্রিন্টিং, অ্যামব্রয়ডারি, স্যাম্পলিং ও ওয়াশিংয়ের মান ঠিক রাখার উপায়।
তৈরি পোশাকের মান নিশ্চিত করা জটিল একটি কাজ। কিন্তু ট্রেনিং নেবার মাধ্যমে আপনি এ বিষয়ে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারেন, যা আপনাকে গার্মেন্টস কোম্পানিগুলোতে সহজে কাজ পেতে ভূমিকা রাখবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন